প্রযুক্তি প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হচ্ছে, কিছুদিন আগেও যেসব প্রযুক্তি ব্যবহৃত হতো এখন তার প্রচলন নেই বা খুব কম ব্যবহার করা হয়। যেসব জিনিস মানুষ কিছুদিন আগে চিন্তাও করতে পারতো না তা এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তির যেসব বিষয় আপনাকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে সাহায্য করবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।
১) প্রগ্রেসিভ ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন (PWA)
প্রগ্রেসিভ ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন যা নেটিভ অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মতোই কাজ করে। এটি অফলাইনেও কাজ করে এবং ইউজার এর কাছে পুশ নোটিফিকেশন পাঠাতে পারে। তবে নেটিভ অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মত ইউজারকে অ্যাপ্লিকেশনটি অ্যাপস্টোর কিংবা প্লেস্টোর থেকে ডাউনলোড করতে হয়না। এতে ইউজার এর সময়, ডাটা এবং স্টোরেজ কম খরচ হয়। যা এর সবচেয়ে ভালো দিক।
২০১৫ সাল থেকেই PWA উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, সম্প্রতি এটি ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যার কিছু বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে –
- গত বছর, বেস্ট ওয়েস্টার্ন রিভার নর্থ হোটেল, PWA সাপোর্টেড ওয়েবসাইট লঞ্চ করে ৩০০℅ রাজস্ব বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলো।
- ওপেনসুক.কম নামের একটি ওয়েবসাইট PWA এর সাপোর্টে ২৬০℅ লিড সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পেরেছিলো।
- সুপরিচিত ডেটিং সার্ভিস টিন্ডার এপ, PWA এর মাধ্যমে ১১.৯১ থেকে ৪.৬৯ পর্যন্ত ডাউনলোডের গতি কমাতে সক্ষম হয়েছিল।
বর্তমানে যেসব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ হচ্ছে তার সবই মোবাইল ডিভাইসের জন্য ফোকাস করে তৈরী করা। তাই PWA টেকনোলজি বর্তমান সময়ের মোবাইলের জন্য বেষ্ট সলিউশন।
একটি সাধারণ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করতে যেকোনো প্ল্যাটফর্মের জন্য প্রায় ২০০-৩০০ ঘন্টা প্রয়োজন। PWA বেজড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে তার অর্ধেকেরও কম সময় লাগে। তাছাড়া এই টেকনোলজি মোবাইল ইউজারদের এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা দিয়ে থাকে। সম্প্রতি গুগল PWA কে প্রায়োরিটি দিয়ে প্লে-স্টোরে PWA সাপোর্টেড অ্যাপস লাঞ্চ করার অনুমতি দিয়েছে। এই কারণে খুব তাড়াতাড়ি এটি ডেভেলপারদের পছন্দের ট্রেন্ডস হয়ে উঠেছে।
২) সার্ভারলেস (Serverless)
সার্ভারলেস, এই নামটি শুনে অনেকেই ভেবে নেয় এটি আসলেই সার্ভারছাড়া এমন কিছু, যেখানে কোনো ব্যাক-এন্ড কোড এর প্রয়োজন নেই। কিন্তু আসলে এই ধারণা ভুল, সার্ভারলেস অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতেও সার্ভার এর প্রয়োজন আছে। পার্থক্য এতটুকুই যে এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যাক-এন্ড কোডগুলোকে ক্লাউড ফাংশন রুপে দেখায়। সার্ভারলেস এর অন্য নাম হচ্ছে – ফাংশন-এজ-এ-সার্ভিস (FAAS)। এরুপ একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে ডেভেলপারদের ইনফ্রাসট্রাকচারের স্কেলিং ও টিউনিং এর কথা ভাবতে হয়না এবং সেই জন্যে অ্যাপ্লিকেশন এর উপর ফোকাস করতে পারে, ফলে দ্রুত অ্যাপ্লিকেশনের ডেভেলপ করা যায় এবং খরচও কমে।
উদাহরণস্বরুপ, সার্ভারলেসে স্যুইচ করে আমেরিকার একটি বড় মিডিয়া কোম্পানি বাস্টল (Bustle), 60% এর বেশি হোস্টিং খরচ হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছিল। এবং কোকা-কোলা যখন ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে পানীয় বিক্রি করার জন্য অটোমেটেড সিস্টেম ডেভেলপ করে, তখন সার্ভারলেসে স্যুইচ করার ফলে হোস্টিং খরচ প্রতি বছর $13,000 থেকে $4,500 পর্যন্ত কমাতে পেরেছিলো।
গত কয়েক বছর ধরে , সার্ভারলেস এর নতুনত্ব এবং কিছু লিমিটেশনের কারণে এটি প্রধানত ছোট প্রজেক্ট, স্টার্টআপ এবং এমভিপি (MVP) এর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।কিন্তু বর্তমানে সফটওয়্যারের বিবর্তনের কারণে এই বাধাগুলো দূর করা সম্ভব হয়েছে। ফলে ক্লাউড অ্যাপ্লিকেশনগুলোর উন্নতি দ্রুত হচ্ছে। কিন্তু অন্য প্রযুক্তিগুলোর মত এরও সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তাই নতুন অ্যাপ্লিকেশন তৈরির ক্ষেত্রে, সার্ভারলেসের কথা কখন ভাবা ঠিক হবে সেবিষয়ে কিছু উদাহরণ দেয়া হলো-
- আপনার প্রডাক্টটি লঞ্চ করার সময় আপনি জানেন না এর ফলাফল কেমন হবে! সেক্ষেত্রে সার্ভারলেস ব্যবহার করা যেতে পারে।
- অ্যাপ্লিকেশনে যদি কিছু স্ট্রিমিং ইভেন্ট করার প্রয়োজন পড়ে। যেমন, ইউজারের ডাটা সংগ্রহ করা, প্রসেস করা এবং ডাটাবেজে সেভ করা। এসব ক্ষেত্রে সার্বারলেস ব্যবহার করা যেতে পারে।
- যদি আপনি অ্যাপ্লিকেশনের কাজকে আরো সহজ ও দ্রুত করতে চান। যেমন, ইমেজ ও ভিডিও নিয়ে কাজ করার জন্য পারফর্মেন্স – ইমপ্রুভিং সার্ভিস তৈরি করার ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা যেতে পারে।
৩) সিংগেল পেইজ অ্যাপ্লিকেশন (SPA)
সিংগেল পেইজ অ্যাপ্লিকেশন হচ্ছে এক ধরণের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন যা একটি পেইজকে একবার লোড করে। অর্থাৎ অ্যাপ্লিকেশনের এক সেকশন থেকে অন্য সেকশনে গেলে পেইজটি রিলোড হয় না। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো লোড হয়। রিলোড না করে একই পেইজ থেকে সার্ভার এর সাথে কানেকশন তৈরী করে। জনপ্রিয় উদাহরণ হচ্ছে, ফেসবুক, গুগল ড্রাইভ, গুগল ম্যাপ, টুইটার, জিমেইল।
সিংগেল পেইজ অ্যাপ্লিকেশন প্রচুর ডাটা ও সময় বাঁচায়। ওয়েবপেইজকে দ্রুত লোড হতে সাহায্য করে। অল্পসময়ে SPA এর সাহায্যে যেকোনো ওয়েব এপ্লিকেশনের সবরকম কাজ করা সম্ভব।
কয়েক বছর আগেও সিংগেল পেইজ অ্যাপ্লিকেশন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) সাপোর্ট করতো না। কিন্তু বর্তমানে এসইও(SEO) সাপোর্ট সহ সিংগেল পেইজ অ্যাপ্লিকেশন তৈরি সম্ভব। একটি ওয়েবপেইজে সার্ভার রেন্ডারিং অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে এই সমস্যাটি সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। অন্যভাবে বলা যায়, এটি ওয়ান-পেজ এপ্লিকেশনের মতোই – তবে প্রথমে যখন সার্ভারে রিকোয়েস্ট পাঠায় এটি শুধু ডাটাই জেনারেট করেনা। পাশাপাশি HTML পেজও তৈরী করে যাতে সার্চ ইঞ্জিন সবগুলো পেজের মেটা-ডেসক্রিপশন, সিমান্টিক মার্ক-আপসহ অন্যান্য তথ্য দেখতে পারে।
আপনি চাইলে আপনার বর্তমান ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনটিকে সিংগেল পেইজ অ্যাপ্লিকেশনে আপগ্রেড করতে পারেন। যদিও সব ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনকে SPA তে রুপান্তর করা যায় না। আপনি যদি চান আপনার অ্যাপটি দ্রুত কাজ করুক এবং মোবাইল বা ডেস্কটপ উভয় ভার্সনেই বেষ্ট পারফরমেন্স পেতে চাইলে সিংগেল পেইজ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের কথা ভাবতে পারেন।
Useful article!
Thank you for reading this article.
লেখার স্পষ্টতার কারনে অনেক বিষয় ক্লিয়ার হলো….শুকরিয়া…
অসংখ্য ধন্যবাদ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।
অনেক সুন্দর তথ্য☺☺
ধন্যবাদ🙂
Nice
Thanks🙂
ভাল কিছু কন্টেন্ট শিখতে পারলাম..!! 🙂
keep it up…!! 👍
ধন্যবাদ🙂
Very important article for Web developer.
Thanks🙂
স্কলার্স ব্লগের প্রথম আর্টিকেল হওয়ায় একটু বেশীই আগ্রহ নিয়ে আর্টিকেলটি খুব নিবিড়ভাবে পড়লাম। যে টপিক নিয়ে কনটেন্ট টি লেখা হয়েছে তা বাংলায় এটাই প্রথম আমার মতে!
পুরো আর্টিকেলেই সম্পূর্ণ নতুন সব টেকনোলজি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সুন্দর গোছানো লেখা হওয়ায় পড়তে বেশ ভালোই লেগেছে!
এরকম আরো অসংখ্য লেখায় স্কলার্স ব্লগ পরিপূর্ণ হয়ে উঠুক এই কামনা করছি 😍
সসম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ…
ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই স্কলার্স ব্লগ পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে🙂
নতুন কিছু শেখানোর জন্য শুকরিয়া ।
আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।